আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শুক্রবার , ১০ অক্টোবর , ২০২৫
অবশেষে শান্তির সূর্য উঠছে গাজার আকাশে। টানা দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত ১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সুখবর নিশ্চিত করেন।
দুই লাখ টনেরও বেশি বোমায় বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির খবর ছড়িয়ে পড়তেই আনন্দে ফেটে পড়েন গাজাবাসী। শরণার্থী শিবিরে নাচে-গানে মুখর হয়ে ওঠে রাত।
মিসরের রিসোর্ট শহর শার্ম আল শেখে তিন দিনের পরোক্ষ আলোচনার পর এই ঘোষণা আসে। কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চূড়ান্ত হওয়া এই চুক্তি ট্রাম্প ঘোষিত ‘২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা’র প্রথম ধাপ। এর আওতায় ১,৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ২০ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারও শুরু হবে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে জানান, ইসরাইলি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলেই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দিবিনিময় কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে টানা তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর ইসরাইলি মন্ত্রিসভা চুক্তিতে সম্মতি দেয়। ভোটাভুটিতেও পাস হবে বলে নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এ
কই সময়ে ট্রাম্প জানান, “সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যেই জিম্মিরা মুক্তি পাবে।” ইসরাইলি গণমাধ্যম চ্যানেল–১২ জানায়, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২০ জন জীবিত ও ২৮ জনের মৃতদেহ রয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম পাঁচ দিনে প্রতিদিন ৪০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরাইল। হামাস জানিয়েছে, তাদের বন্দিমুক্তির তালিকায় ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতির নাম রয়েছে। তবে ইসরাইল তার মুক্তিতে রাজি হয়নি।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও বুধবার রাতভর গাজা সিটি ও খান ইউনিসে ইসরাইলি হামলায় নয়জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। রয়টার্সের তথ্যমতে, ড্রোন হামলায় বেসামরিক এলাকা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
বিশ্বনেতারা এই যুদ্ধবিরতিকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথে বড় অগ্রগতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান বলেন, “ইসরাইলকে রাজি করাতে ট্রাম্পের ভূমিকা প্রশংসনীয়।” সৌদি আরব জানায়, এটি গাজাবাসীর মানবিক কষ্ট লাঘবে সহায়ক হবে। কাতার বলেছে, চুক্তিতে যুদ্ধের অবসান, বন্দিবিনিময় ও ত্রাণপ্রবেশের সকল দফা নির্ধারিত হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “এটি যুদ্ধের অবসান ও দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নতুন অধ্যায়।” যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তার ওপর সব নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নিতে হবে।”