আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বুধবার , ২৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার তালিকায় যোগ হলো আরও ছয় দেশ। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিশেষ সম্মেলনে ফ্রান্স, অ্যান্ডোরা, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা ও মোনাকো ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এর আগের দিন যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল একই ঘোষণা দেয়।
ফ্রান্সের স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের মধ্যে চারজন ফিলিস্তিনকে গ্রহণযোগ্যতা দিল। এখন একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১৯৮৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যদেশের মধ্যে ১৫৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা মোট সদস্যের ৮০ শতাংশের বেশি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন স্বীকৃতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা। তবে একইসঙ্গে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি চান তিনি। ট্রাম্প জাতিসংঘের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, একে তিনি “ফাঁকা বুলি” হিসেবে অভিহিত করেন।
ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানানো দেশগুলোর নেতারা বলেন, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান টিকিয়ে রাখা জরুরি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জানান, সময় এসেছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও বলেন, “রাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের অধিকার, কোনো পুরস্কার নয়।”
এদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে তারা দুটি শর্ত রেখেছেন—গাজার সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। অন্যথায় রোম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে না।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা পশ্চিমাদের এই স্বীকৃতিকে “সার্কাস” বলে আখ্যা দিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এর জবাবে পশ্চিম তীরের অংশ দখল, কূটনৈতিক সম্পর্ক সংকুচিত করা বা স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের পথ নিতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষ। আন্তর্জাতিক মহল গাজায় যুদ্ধবিরতি ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের অভিযান থেমে নেই।