প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বুধবার , ২৬ মার্চ , ২০২৫
এবারের পহেলা বৈশাখের আয়োজন ও মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা কোনোভাবে সম্পৃক্ত না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন অনুষদের ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার এক স্পষ্ট বিবৃতিতে ২০১৭-১৮ সেশনের এই শিক্ষার্থীরা এবারের আয়োজন বর্জনের সিদ্ধান্ত কথাও জানিয়েছেন।
২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মূলত বৈশাখ প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধায়নে এবং সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়ে থাকে। যে আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।
“চারুকলার রীতি অনুযায়ী যা এ বছর আমাদের ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনোরকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধু শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা আমাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”
শিক্ষার্থীরা বলেছে, এবার একাডেমিকভাবে বৈশাখ আয়োজন করার এই সিদ্ধান্ত অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ছাত্রপ্রতিনিধি কারও সঙ্গে কোনোরকম পূর্ব–আলোচনা ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় খুবই অতর্কিতভাবে নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শোভাযাত্রার জন্য বানানো স্ট্রাকচারের ডিজাইন ও আইডিয়া (কাঠামোর নকশা ও ভাবনা) সম্পূর্ণ শিক্ষকদের দেওয়া, চারুকলার আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কোনোভাবেই সংযুক্ত ও অবগত নন। শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে স্ট্রাকচার তৈরি সম্পর্কেও তারা অবগত ছিলেন না এবং কারও ব্যক্তিগত মতাদর্শে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও তারা নন।
এবারের বৈশাখকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বৈশাখ’ হিসাবে অভিহিত করে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের ‘চাটুকারিতাপূর্ণ’ মনোভাবের কারণে আমরা শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না।
“আমরা মোটাদাগে প্রতিবছর চারুকলা অনুষদে আয়োজিত হয়ে আসা বৈশাখের আয়োজন নয় বরং স্বজনপ্রীতিদুষ্ট ও দেশের পরিবর্তনকালীন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী এবারের ‘বৈশাখ ১৪৩২’ এর আয়োজন ও আয়োজক কমিটিকে আমরা, চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, আমাদের এই সিদ্ধান্তকে সবাই সমর্থন ও সম্মান জানাবে।”
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, শুরুর দিকে এই শোভাযাত্রা চারুকলার ছাত্র–শিক্ষক সবার অংশগ্রহণে আয়োজন করা হতো। তবে ২০০৫ সালের দিকে এসে এটি একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ওপর দেওয়া হয়।
“তবে এটি যেহেতু একটি একাডেমিক কাজের অংশ, তাই শুধু শিক্ষার্থীরা নন, বরং সুষ্ঠু জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য এবং বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে যেন কোনো ভাবমূর্তি নষ্ট না হয়, সেজন্য এবার ছাত্র–শিক্ষক সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই শোভাযাত্রা আয়োজন করা হচ্ছে।”
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেই এভাবে আয়োজনের দাবি করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে কেউ কেউ এটাকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে।