প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শুক্রবার , ২৫ এপ্রিল , ২০২৫
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ছাত্রদের দাবির মুখে অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতৃত্বকে সরানো হল।
শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই দুই শিক্ষক এখন নিজ নিজ বিভাগে পাঠদানে ফিরে যাবেন।
গত বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও জুলাই আন্দোলনের একটি পক্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গত ১৩ এপ্রিল থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনাকে সামনে এনে ওই ঘটনায় জড়িত ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। তবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
ওই বহিষ্কার উদ্যোগের প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষার্থীদের একটি অংশ উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমরণ অনশন শুরু করেন জনা ত্রিশেক শিক্ষার্থী। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।