তানভীর ইবনে মোবারক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ৯ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম দিনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
তবে রাস্তায় দীর্ঘ যানজটে সময় মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) যানজটের কারণে শিক্ষার্থীদের ‘ স্বপ্নগুলো চোখের সামনে ধ্বংস হতে দেখলাম’ শীর্ষক এক ফেসবুকে আক্ষেপ করে পোস্ট করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের (৫৩ ব্যাচ) শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী।
"একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সকাল ৭.৩০ থেকে টাঙ্গাইল জেলার টেন্ট এ সময় দিচ্ছিলাম। রিকসা কম থাকার ঝামেলার কথা চিন্তা করে আমরা আগে থেকেই কয়েকটা বাইক রেডি রেখেছিলাম। আমরা সবাই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কিন্তু তবুও আমরা অনেক স্বপ্ন ধ্বংস হতে দেখেছি," এভাবেই লিখেছেন চিশতী।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, অনেকে পূর্বনির্ধারিত সময়ে রওনা দিলেও সময়মতো আসতে পারেননি। অনেকে সাভার থেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিয়েছে। আবার এমএইচ গেট ( মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন গেট) দিয়ে ঢুকে সাভার স্কুল এন্ড কলেজ এ হেঁটে গিয়েছে। (গেট থেকে জাবি স্কুল এন্ড কলেজ এর দুরত্ব আড়াই কিলোমিটার) এতো কান্না, এতো আহাজারি আর সহ্য হচ্ছে না। শেষ সময়গুলোতে ভর্তিচ্ছু এবং অভিভাবকদের আহাজারি ছিলো বেদনাদায়ক।
অভিভাবকরা বলেছেন, একজন শিক্ষার্থীর দায়িত্ব ভালোভাবে পড়াশোনা করে পরীক্ষায় বসা। তা না করে তাঁর যদি ৫ কিলোমিটার হেঁটে এসে ৩০ মিনিট পর পরীক্ষায় বসতে হয় সে কী ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারবে? কতো মানুষ আজকে পরীক্ষা দিতে পারেনি তার ধারণা নেই। কতো মানুষের স্বপ্ন গাড়িতে বসেই শেষ হয়ে গেছে জানা নেই। এমন কেনো হবে দেশসেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে? আমরা জানি প্রশাসন অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু সেটা সফল ভাবে বাস্তবায়ন হয় নি। ট্রাফিক ব্যবস্থা ব্যহত হয়েছে। ডেইরি গেট (প্রধান ফটক সংলগ্ন), প্রান্তিক গেট, বিশমাইল গেটগুলোতে (বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের গেটসমূহ) রিকসাগুলো জ্যাম তৈরি করেছে।
অবশ্যই সামনের বছর থেকে ঢাকা, রাজশাহীর মতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিভাগ ভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে।
জাবির ইংরেজি বিভাগেরর ৫৩তম আবর্তনের মোহাম্মদ আলী চিশতী মুঠোফোনে ক্যাম্পাস মিররকে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ভাই, আজকে আমার মনটা খুবই খারাপ। সারাদিন শুধুমাত্র ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে রাস্তায় তীব্র যানজটে নিজ চোখের সামনে কতগুলো স্বপ্ন ভঙ্গ করতে দেখলাম সেটা ভেবেই কান্না পাচ্ছে। দীর্ঘদিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে একটা শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ. কে. এম. রাশিদুল আলম বলেন, যানজট নিরসনে আজকে সন্ধ্যায় সাভারে একটি মিটিং কল করা হয়েছে। সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমি উপস্থিত থাকবো। এছাড়া সেই মিটিংয়ে আর্মি, পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ থেকে সবাই উপস্থিত থাকবেন। মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়ে রাতে জানাতে পারবো। তবে আশা করি কালকে থেকে এ ধরণের ঝামেলা ও ভোগান্তি কমবে।