প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শুক্রবার , ১৪ নভেম্বর , ২০২৫
চলতি ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ৫৭২টি আসন কমানো হয়েছে। তবে আসন কমানোর মধ্যেই নতুন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদন পেয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ বছর ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৫,১০০। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৫,৩৮০টি। অর্থাৎ সরকারি খাতে ২৮০টি আসন কমানো হয়েছে।
১৪টি কলেজে মোট ৩৫৫টি আসন কমানো হলেও তিনটি কলেজে ৭৫টি আসন বাড়ানোয় চূড়ান্ত হিসাবে নিট ২৮০টি আসন কমেছে।
ঢাকা মেডিকেলসহ দেশের ১২টি পুরোনো মেডিকেল কলেজে ২৫টি করে আসন কমানো হয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ৫টি এবং হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে সর্বোচ্চ ৫০টি আসন কমেছে।
অন্যদিকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, টাঙ্গাইল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ২৫টি করে আসন বেড়েছে।
নতুন অনুমোদন পাওয়া ঢাকার ব্যারিস্টার রফিক–উল–হক মেডিকেল কলেজে ৫০টি আসন যুক্ত হওয়ায় এখন বেসরকারি ৬৬টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৬,০০১টি। গত বছর ছিল ৬,২৯৩টি। ফলে বেসরকারি খাতে নিট ২৯২টি আসন কমেছে।
প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় দুটি কলেজ—বিক্রমপুর ভুঁইয়া মেডিকেল কলেজ এবং মনোয়ারা সিকদার মেডিকেল কলেজ—এই বছর ভর্তি কার্যক্রম থেকে বাদ পড়েছে। এ দুটির মোট ১০৭টি আসন স্থগিত হয়েছে।
এ ছাড়া আরও ১০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ২৬০টি আসন কমানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শহীদ মনসুর আলী, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন ফরিদপুর, সিটি মেডিকেল কলেজ, মার্কস, ডেল্টা, শাহাবুদ্দিন, ডা. সিরাজুল ইসলাম এবং এমএইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজ।
আগের মতোই চারটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ—আইচি, নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল, নর্দার্ন প্রাইভেট এবং শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ—নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না।
স্বাস্থ্যসচিব সাইদুর রহমান বলেন, অবকাঠামো, শিক্ষকসংখ্যা, হাসপাতালে সেবা সুবিধা এবং অন্যান্য মানদণ্ড বিবেচনায় সব মেডিকেল কলেজের সমন্বিত মূল্যায়ন করা হয়েছে। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নত হয় এবং ভালো চিকিৎসক তৈরি হয়।
২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও মূল্যায়ন ছাড়াই অতিরিক্ত ১,০৩০টি আসন বাড়ানো হয়েছিল। বিষয়টি তখন ব্যাপক সমালোচিত হয়। কর্মকর্তারা জানান, এর অনেক অনুমোদনই ছিল রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া।
গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মেডিকেল আসন যৌক্তিক পর্যায়ে আনার ঘোষণা দেয়। মানহীন কিছু মেডিকেল কলেজ বন্ধ বা একীভূত করার পরিকল্পনাও ছিল, কিন্তু সম্ভাব্য বিরোধিতার কারণে পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
১১ নভেম্মবর থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু হচ্ছে। দুটি পরীক্ষাই আগামী ১২ ডিসেম্বর একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।