প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার , ২০ মার্চ , ২০২৫
বরিশালে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতারের পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী পরিচয় দেওয়া একটি দলের তোপের মুখে পড়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বরিশাল ক্লাবে এমন পরিস্থিতিতে পড়েন তিনি। পরে পুলিশ পাহারায় সেখান থেকে বের হয়ে আসেন।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা গণআন্দোলনে অংশ নেওয়া তৃণমূলের শিক্ষার্থী। তাদের বাদ দিয়ে কেবল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন নাহিদ; সেজন্যেই তাদের এই প্রতিবাদ।
তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, বহিরাগত ‘কিছু পোলাপান’ এসে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নাহিদ ইসলামের উপস্থিতিতে শুরুতে ক্লাবের ভেতরে হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ায় এনসিপি কর্মী এবং বিক্ষোভকারীরা।
এরপর নাহিদ ইসলাম অনুষ্ঠান শেষ করে গাড়িতে চড়ে বের হওয়ার পথে একদল তরুণ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে তিনি সামনে এসে বিক্ষোভাকারীদের বুঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এর মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট হট্টগোল ও হাতাহাতি চলে। শেষে এনসিপির কর্মীরা বেষ্টনী তৈরি করার পর উপস্থিত পুলিশের সহযোগিতায় তিনি বরিশাল ক্লাব ত্যাগ করেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, আজ সাত মাস হয়ে গেল, তারা আমাদের সাথে কথা বলে না, বসে না, আলাপ করে না। শুধু আহ্বায়ক-সমন্বয়কদের সাথে কথা বলে হোয়াটসঅ্যাপে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ এবং বরিশাল জেলার সদস্যসচিব এস এম ওয়াহিদুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন সংক্ষুব্ধরা।
তবে বিক্ষোভের বিষয়ে শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “দলের বাইরে থেকে কোনো একটা গ্রুপ এ কাজটা করছে, উস্কানি দিয়ে। নাহিদ ইসলাম বরিশালে আসার পর যে ভালো ইমেজ হওয়ার সুযোগ ছিল, সেটা নষ্ট করার জন্য।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে একটি বহু দলীয় মোর্চার ব্যানারে গত জুলাইয়ে সরকার পতন আন্দোলন শুরু হয়েছিল। নাহিদের সংগঠন ছাত্রশক্তি ছাড়াও এই ব্যানারে শিবির, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা যুক্ত হয়েছিলেন।
আন্দোলনের সময় জরুরি মুহূর্তে দেশের সব জেলা ও গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ‘সমন্বয়ক’ ও ‘সহ-সমন্বয়ক’ পদবি দিয়ে ছোট ছোট কমিটি দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরবর্তীতে গত আট মাসে বিভিন্ন দাবি পূরণে শতশত আন্দোলন গড়ে উঠলে সেগুলোর নামের পাশেও ‘বৈষম্যবিরোধী’ শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছিল।
আন্দোলন শেষ হলে গত সেপ্টেম্বরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের একটি অংশ প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও পরে সেখান থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি গঠন করে। সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্মটির এখন প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা কয়েকদিন আগে সেই প্রশ্নও উত্থাপন করেছিলেন নাহিদ।