প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শনিবার , ২১ জুন , ২০২৫
বেলজিয়ামের একদল বিজ্ঞানীর নৃতাত্ত্বিক ও জিনতাত্ত্বিক গবেষণায় প্রাচীনকালে মানুষ দেখতে কেমন ছিলেন, তার ধারণা পাওয়া গেছে। ডিএনএ ব্যবহার করে গবেষকরা ১০ হাজার ৫০০ বছর আগের এক নারীর মুখমণ্ডল তৈরি করেছেন।
সম্প্রতি বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কঙ্কাল থেকে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে ওই নারীর মুখমণ্ডল তৈরি করেছেন।
তাদের বিশ্লেষণে জানা গেছে, পশ্চিম ইউরোপে মধ্য প্রস্তর (মেসোলিথিক) যুগে ওই নারীর জন্ম। তার চোখ ছিল নীল। ত্বক ছিল অন্যদের তুলনায় উজ্জ্বল।
‘মেসোলিথিক বেলজিয়াম’ শীর্ষক এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রত্নতত্ত্ববিদ ইসাবেল দে গ্রোট।
সিএনএনকে ইসাবেল দে গ্রোট জানান, এই নারী যুক্তরাজ্যের সমসাময়িক ‘চেডার ম্যান’ জনগোষ্ঠীর একজন সদস্য। তবে তার ত্বক ছিল অন্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল।
এটা প্রমাণ করে, ইউরোপীয় শিকারি সম্প্রদায়ের মানুষের জিনগত গঠনে ধারণার চেয়ে বেশি বৈচিত্র্য ও তাদের ত্বকের রঙের পার্থক্য ছিল।
অধ্যাপক গ্রোট বলেন, খুলি বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, মৃত্যুকালে ওই নারীর বয়স ছিল ৩৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। উঁচু নাসারন্ধ্র ও দীর্ঘাকৃতির নাক ছিল তার, চেডার ম্যান সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে এর মিল রয়েছে। নারীর জন্য অস্বাভাবিক হলেও তার ভ্রুর ওপরের হাড়ের গঠনও ছিল দৃঢ়।
১৯৮৮-৮৯ সালে বেলজিয়ামের দিনঁ অঞ্চলে মারগো গুহা খননের সময় ওই নারীর কঙ্কালটি পাওয়া যায়। এ সময় সেই গুহা থেকে আরও আট নারীর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল।
অধ্যাপক গ্রোট জানান, মধ্য প্রস্তর যুগে এভাবে একসঙ্গে নারীদের এমন সমাধি আবিষ্কারের এ ঘটনা ছিল বিরল। কারণ, এর আগে পাওয়া মধ্য প্রস্তর যুগের বেশির ভাগ সমাধির ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নারী, পুরুষ ও শিশুদের একসঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়েছে।
ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক প্রত্নতত্ত্ববিদ ও গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ফিলিপ ক্রঁবে বলেন, গত শতকের আশির দশকে যখন এসব কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন প্রাচীন মানুষের ডিএনএ বিশ্লেষণ করার মতো প্রযুক্তি ছিল না। এখন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে তারা সেই নারীদের মধ্যে একজনের মুখমণ্ডল আবার তৈরি করতে পেরেছেন।