প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫
সামুদ্রিক কচ্ছপের চলাফেরা খুব বিস্ময়কর। এরা মহাসাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশিতে হাজার মাইল পেরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারে। এই চলাচলে কচ্ছপ সব সময় সোজা পথ ব্যবহার করে না। এমনকি কম সাঁতরে যাওয়া যাবে, এমন দিকও অনুসরণ করে না। তবে ঠিকই শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যায়।
গবেষকেরা বহু বছর ধরে কচ্ছপের এই চলাচল নিয়ে বিস্মিত হয়েছেন। সম্প্রতি কচ্ছপের নাচ থেকে দিক নির্ণয়ের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন গবেষকরা।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এই গবেষণায় বলা হয়েছে, সামুদ্রিক বাচ্চা লগারহেড কচ্ছপ পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ব্যবহার করে দিক নির্ণয় করতে পারে। খবর সিএনএন।
গবেষণার সহ-লেখক ক্যাথরিন লোম্যান বলেছেন, ‘এটা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে সামুদ্রিক কচ্ছপ অদৃশ্য তরঙ্গের তথ্যের বিশাল ভাণ্ডার ব্যবহার করতে পারে। এই তথ্য দিয়ে এরা এমনভাবে দিকনির্ণয় করে, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।’
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকরা একই ধরনের ফলাফল পান যখন কচ্ছপদের কিউবা, ডেলাওয়ার, মেইন, ফ্লোরিডা এবং অন্যান্য স্থানের চৌম্বকীয় সংকেতের সংস্পর্শে কচ্ছপদের রাখেন।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সামুদ্রিক কচ্ছপ দীর্ঘ বছর ধরে চৌম্বকীয় স্থানাঙ্ক মনে রাখতে পারে। এটি এদের ভয়ংকর ও বিপজ্জনক মহাসাগরীয় পরিবেশে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
তাদর গবেষণায়, লগারহেড কচ্ছপদের দুটি ভিন্ন চৌম্বকীয় অনুভূতি রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। একটিকে এরা কম্পাসের মতো ব্যবহার করে, যা এদের সাধারণ দিকনির্দেশনা দেয়। অন্যটি মানচিত্রের মতো ব্যবহার করে। এটি নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
সামুদ্রিক কচ্ছপের দিকনির্ণয়ের রহস্য উন্মোচনের জন্য গবেষকরা আটক অবস্থায় থাকা বাচ্চা কচ্ছপ পর্যবেক্ষণ করেছেন। যখন বাচ্চা লগারহেড কচ্ছপ বুঝতে পারে খাবার আসছে, তখন এরা আনন্দে নাচে। এর মানে খাবার আসার সময় এরা পানির ওপরে মাথা তোলে। পাখনাগুলো নাড়ায় এবং প্রায়ই চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।
গবেষকরা বুঝতে পেরেছিলেন, এই অভ্যাসকে পর্যবেক্ষণ করে লগারহেড কচ্ছপের সঙ্গে চৌম্বক ক্ষেত্রের সম্পর্ক বোঝার পরীক্ষা করতে পারবেন। তারা কচ্ছপদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেন যেন নির্দিষ্ট একটি চৌম্বকীয় ক্ষেত্র খাবারের সঙ্গে যুক্ত হয়।