প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ২৪ আগস্ট , ২০২৫
প্রেম মানুষের জীবনের অন্যতম আবেগঘন অনুভূতি। যুগে যুগে সাহিত্য, সিনেমা ও গানে প্রেমের জয়গান হলেও বাস্তবে এর রয়েছে ভালো-মন্দ দুই দিকই। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রেম এখন যেমন স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণার উৎস, তেমনি অনেক সময় তা হয়ে উঠছে হতাশা, মানসিক চাপ ও সামাজিক টানাপোড়েনের কারণ।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রেম মানুষের জীবনে ইতিবাচক শক্তি জোগায়। ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িত থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, মানসিক প্রশান্তি আসে, পড়াশোনা ও কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে। প্রিয় মানুষ পাশে থাকলে জীবনের নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলানোও সহজ হয়। অনেকেই মনে করেন, প্রেম এক ধরনের মানসিক আশ্রয়, যা হতাশা ও একাকিত্ব দূর করে।
তবে এর উলটো চিত্রও রয়েছে। একতরফা প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা বা সম্পর্ক ভাঙন তরুণ-তরুণীদের গভীরভাবে আঘাত করে। অনেকে পড়াশোনায় মনোযোগ হারায়, মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ভোগে। সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্ক ভাঙনের কারণে আত্মহত্যা ও সহিংস ঘটনার খবরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প বয়সে অপরিণত মানসিকতা ও সামাজিক চাপ মিলিয়ে অনেক সময় প্রেম জটিল সমস্যার জন্ম দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন বলেন, “প্রেম স্বাভাবিক একটি মানবিক অনুভূতি। তবে তরুণদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সম্পর্কের ভেতরে সম্মান, বিশ্বাস ও সহনশীলতা থাকতে হবে। তা না হলে সম্পর্ক সুন্দরভাবে টিকতে পারে না।”
তরুণদের মতে, প্রেম তাদের জীবনে একদিকে প্রেরণা, অন্যদিকে অনিশ্চয়তা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি হাসান বলেন, “প্রেম মানুষকে বদলে দেয়। তবে সম্পর্ক ভেঙে গেলে সেটা সামলানো অনেক কঠিন।”
সামাজিক গবেষকরা মনে করেন, প্রেমকে একেবারে নেতিবাচকভাবে দেখা উচিত নয়। বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্কের ইতিবাচক দিক, মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারস্পরিক সম্মানের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনায় আনা জরুরি।
প্রেম জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহের অংশ। এর ভালো দিক যেমন সুখ ও মানসিক শক্তি দেয়, তেমনি খারাপ দিক হতাশা ও দুঃখ ডেকে আনে। সচেতনতা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সুস্থ যোগাযোগ থাকলেই প্রেম হতে পারে জীবনের এক সুন্দর অভিজ্ঞতা।