প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ২ মার্চ , ২০২৫
আপিল শুনানির রায়ে বাতিল হওয়া নিয়োগ পুনর্বহাল না হলে গণআত্মহুতির হুমকি দিয়েছেন আদালতের রায়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষকরা।
রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা একটি আপিল আবেদনের রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত আছে।
তার আগে শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ‘প্রতীকী ফাঁসি’ কর্মসূচি পালন করে এ হুমকি দেন। নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ২৪ দিন টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া হাই কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনায় আপিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার সেই আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারিত আছে। এদিন আপিল বিভাগের রায় আসতে পারে বলে আশা প্রার্থীদের।
শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তারা রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে সেখান থেকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ শিরোনামে র্যালি বের করেন।
র্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘুরে ফের শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়। পরে তারা সেখানেই অবস্থান নেন। রাতেও তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন।
শনিবার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার নিয়োগ বাতিল হওয়া আন্দোলনর প্রার্থী মো. মজিবুর রহমান রাসেল বলেন, “নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে আমরা বিকালে প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেছি। আগামী কাল আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারিত আছে। আমরা সবাই রায়ের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায় বাতিল করে দেবে। কিন্তু তা না হলে আমাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। নিয়োগ নিশ্চিত জানার পর চাকরি না পাওয়ার কষ্ট আর সামাজিক বঞ্চনা আর কেউ বুঝবে কি না জানি না। তবে আপিলের রায়ের মাধ্যমে আমাদের নিয়োগ নিশ্চিত না হলে আমরা সবাই একসঙ্গে আত্মহত্যা করব।”
গত ৩১ অক্টোবর তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের ১৪ জুন এ নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
৩০ চাকরিপ্রার্থীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দিয়েছিল। ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেই রুলের ওপর রায় দেয় হাই কোর্ট।
নিয়োগ বাতিলের রায় ঘোষণার পরদিন গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রার্থীরা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে তারা একাধিকবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে একইভাবে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।