প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: সোমবার , ৬ জানুয়ারী , ২০২৫
প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় নির্বাচিতদের মধ্যে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়া ২২৭ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠক আহ্বান করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এই ২২৭ জন প্রার্থীর বিষয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্য পাওয়া যায় বিধায় তাদেরকে সাময়িকভাবে বাদ রেখে গত ৩০ ডিসেম্বর অবশিষ্ট ১৮৯৬ জন প্রার্থীকে নিয়োগের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকেই উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীরা নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকে। রোববার তারা সম্মিলিতভাবে জনপ্রশাসন সচিবের বরাবরে নিয়োগের সিদ্ধান্ত পুনবিবেচনার আবেদন জানান।
জনপ্রশাসনের এক অভ্যন্তরীণ চিঠিতে বলা হয়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন কর্তৃক সুপারিশকৃত ২১৬৩ (দুই হাজার একশত তেষট্টি) জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮৯৬ (এক হাজার আটশত ছিয়ানব্বই) জন প্রার্থীর নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২২৭ (দুইশত সাতাশ) জন প্রার্থীর সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বিরূপ মন্তব্য থাকায় তাদের নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। ওই প্রার্থীরা তাদের নিয়োগের বিষয় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে আগামী ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে তর সভাকক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ওই সভায় প্রয়োজনীয় তথ্যসহ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) এর একজন প্রতিনিধি, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের একজন প্রতিনিধি, নিয়োগ ও পদন্নোতি শাখার অতিরিক্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সাময়িকভাবে ২১৬৩ জন প্রার্থীকে মনোনীত করে ২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সুপারিশ করা হয়।
বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রার্থীদের প্রাক-চরিত্র যাচাই-বাছাই অন্তে সুপারিশকৃত ২১৬৩ (দুই হাজার একশত তেষট্টি) জন প্রার্থীর মধ্য হতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং এজেন্সি রিপোর্ট বিবেচনায় সাময়িকভাবে ৫৯ জন মোট (৪০+৫৯) =৯৯ জন বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ২১৬৩-৯৯-২০৬৪ জন প্রার্থীর অনুকূলে গত ১৫ অক্টোবর নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ নিয়োগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে সব সমালোচনার উর্ধ্বে থেকে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী নির্ধারণে এবং সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার নিমিত্ত ৪৩তম বিসিএস এর সুপারিশকৃত ২১৬৩ জন প্রার্থীর বিষয়ে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এনএসআই এবং ডিজিএফআই এর মাধ্যমে প্রাক-চরিত্র পুনরায় অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এনএসআই এবং ডিজিএফআই থেকে ২১৬৩ জন প্রার্থীর উপযুক্ততা/অনুপযুক্ততা বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২২৭ (দুইশত সাতাশ) জন প্রার্থীর প্রাক-চরিত্র বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য (আপত্তি/অসুপারিশকৃত) পাওয়া যায়। ২২৭ জন প্রার্থীর বিষয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে সাময়িকভাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয় এবং তাদের বিষয়ে অধিকতর যাচাই-বাছাই ও খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জনকে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়।
এই অবস্থায় সুপারিশকৃত ২১৬৩ জন প্রার্থীর মধ্য হতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ (দুইশত সাতাশ) জন মোট (৪০+২২৭) ২৬৭ জন বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ১৮৯৬ জন প্রার্থীর অনুকূলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তবে সাময়িকভাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত ২২৭ জনের মধ্যে যেকেউ পুনবিবেচনার জন্য আবেদন করলে তা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়।