প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ১৭ আগস্ট , ২০২৫
প্রতি বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী বের হলেও এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থাৎ চার লাখ শিক্ষার্থী বেকার থেকে যাচ্ছেন। বাকি ছয় লাখের মধ্যে প্রায় চার লাখ সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন, আর দুই লাখ শিক্ষার্থী নিজস্ব উদ্যোগে কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে নিচ্ছেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অডিটোরিয়ামে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা ল্যাব, শিক্ষক, ডেমোনস্ট্রেটর, অধ্যক্ষ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা পাচ্ছে না। এতে নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এখন সময় এসেছে বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে তাদের দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করার। এজন্য একটি আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন জরুরি।”
অধ্যাপক আমানুল্লাহ আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন হয়নি। এখনো একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। অথচ সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো একই অবস্থা থেকে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি জানান, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ১১ শতাংশ, এর মধ্যে প্রায় ৪.৫ শতাংশ এখনো বেকার। তাই চাকরির বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও এর প্রতিফলন বাস্তব শিক্ষায় দেখা যায় না। পাশাপাশি যারা ভালো ফল করছে না, তারা কোথায় যাচ্ছে তা নিয়েও গবেষণা প্রয়োজন।” তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে দেশের প্রকৌশলীরা থাকলেও মূল দায়িত্ব পালন করেছে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা। এর মূল কারণ হলো দেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাঈদ ফেরদৌসসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ, গবেষক ও নীতি-নির্ধারকরা।
সভাপতিত্ব করেন ইআরআই চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন।