প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বুধবার , ৮ জানুয়ারী , ২০২৫
সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে যারা আহত হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের পুলিশ বাহিনীতে ‘চাকরি দেওয়া হবে’ বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এছাড়া ঢাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য এক হাজার ছাত্রকে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অনেক নিহত এবং অনেক আহত হয়েছে। যারা আহত হয়েছে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় সে ব্যাপারে একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের পুলিশে অ্যাবজর্ব করতে পারি, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।"
মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে পুলিশে বিশেষ শাখা (এসবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেছেন, আহতদের সবার সমস্যা এক নয়, আলাদারকম। শিগগিরই তাদের পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "আপাতত একশ জনকে নিয়োগ দিয়ে শুরু করছি। পরে হয়তো এই সংখ্যাটা আস্তে আস্তে বাড়াব।"
রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছু পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার কথা তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আরেকটা জিনিস হল ট্রাফিকের যে সমস্যা ওটা কিন্তু রয়ে গেছে। যদিও যানজটের সমস্যাটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একা দায়িত্ব না। বিভিন্ন সরকারি বাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সদস্যদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে যুক্ত করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তাতে পর্যাপ্ত সাড়া পাওয়া যায়নি।"
ঢাকার সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে গত বছরের অক্টোবরে পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার কথা জানিয়েছিল সরকার। পরে এই সংখ্যা আরো বাড়ানো হয়।
শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এজন্য আমরা এক হাজার ছাত্রকে ট্রাফিকে নেওয়ার একটা প্রপোজাল পাঠিয়েছি। এ পর্যন্ত ৪০০ জনকে নেওয়া হয়েছে। প্লাস আমরা আরেকটা প্রপোজাল পাঠিয়েছিলাম- রিটায়ার্ড পুলিশ, বিজিবি, আনসার, আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স থেকে কিছু রিক্রুট করে ট্রাফিক ডিউটিতে লাগাতে চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু এটার রেসপন্সটা অনেক কম।
“আমি ভেবেছিলাম আরও অনেকে আসতে চাইবে। কিন্তু ওরকম আমরা খুব একটা বড় সংখ্যা পাইনি। আপনারা প্রচার করে দিতে পারেন যে যদি তারা আসে আমরা একটা বড় সংখ্যা নেব। আপাতত আমরা ৫০-৬০ জন পেয়েছি। আমরা চেয়েছিলাম যে অন্তত পাঁচ-ছয়শ দিয়ে শুরু করি। কিন্তু এরকম পাইনি।”
সড়কে কাজের জন্য ছাত্রদের লেখাপড়ার ক্ষতি হবে কী না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তাদের তো আমরা সময়টা খুব কম দিচ্ছি। তারা হয়ত ওই চার ঘণ্টা বা তিন ঘণ্টা ডিউটি করল এরপর গিয়ে ক্লাস করল। আবার একটা সম্মানীও আছে।”
ছিনতাই রোধে সড়কে পুলিশের উপস্থিতি কম কেন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশ যে বের হচ্ছে না তা না। কিন্তু তাদের কিছু লিমিটেসনস রয়ে গেছে। এক নম্বর হচ্ছে আমরা অনেক চেঞ্জ করছি। এখন তাদের রাস্তাঘাট চিনতে সমস্যা হচ্ছে। সোর্সগুলো চেঞ্জ হয়েছে। আবার থানায় তাদের থাকার জায়গাগুলো নষ্ট হয়েছে, আমরা রিপেয়ার করতে পারিনি। আবার গাড়ি-ঘোড়ারও সমস্যা আছে। তাদের এ বিষয়গুলোও তো দেখতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, এসবির অতিরিক্ত আইজি মো. গোলাম রসুল, সিআডির অতিরিক্ত আইজি মতিউর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।