প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার , ২ অক্টোবর , ২০২৫
বিশ্ব অক্সিজেন দিবস বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য—‘সবার জন্য অক্সিজেন’। করোনা-পরবর্তী সময়ে অক্সিজেন নিয়ে আলোচনা কিছুটা স্তিমিত হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সময় বাড়িতে থাকা রোগীদের অক্সিজেন ব্যবহারে মনোযোগী হওয়ার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অক্সিজেনকে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করে। শুধু করোনা বা নিউমোনিয়া নয়, সার্জারি, ট্রমা, গর্ভাবস্থা, নবজাতক ও বয়স্কদের নানা শারীরিক জটিলতায় অক্সিজেন অপরিহার্য।
শরীরের রক্ত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও টিস্যু সচল রাখতে অবিরাম অক্সিজেন প্রয়োজন। খাদ্য বা পানি ছাড়া কিছুদিন বেঁচে থাকা সম্ভব হলেও অক্সিজেন ছাড়া কয়েক মিনিটও সম্ভব নয়।
করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালের মাঝামাঝি দেশে অক্সিজেনের তীব্র সংকট দেখা দেয়। মহামারির আগে দৈনিক ৫০ থেকে ৭০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের চাহিদা থাকলেও সেই সময় তা বেড়ে যায় আড়াই থেকে তিনগুণ।
ভারত থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে সংকট দেখা দেয় এবং অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও দাতাদের সহায়তায় সারা দেশে ১২০টি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন ও প্রায় ৩০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে দেশে অক্সিজেন ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতাল ছাড়াও বাড়িতে অক্সিজেন ব্যবহারের ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। দেশে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। তাদের অনেকেই দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, যাদের অনেকে হাসপাতালে যেতে পারেন না বা সামর্থ্য নেই। এসব রোগীর জন্য বাড়িতে অক্সিজেন থেরাপি কার্যকর হতে পারে।
আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও ল্যানসেট কমিশনের সদস্য ডা. আহমদ এহসানূর রহমান বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগে ভোগা মানুষ অক্সিজেন পেলে তাঁদের জীবনমান বদলে যায়। বাংলাদেশে এখনো সেই যাত্রা শুরু হয়নি। এবার অক্সিজেন দিবসে আমাদের সেই পথে এগোতে হবে।”
করোনা সংকটে অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা যে শিক্ষা দিয়েছে, এখন সেটিকে স্থায়ী রূপ দিয়ে ‘সবার জন্য অক্সিজেন’ নিশ্চিত করা—এই সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ।