স্বাস্থ্য ডেস্ক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বুধবার , ১৩ আগস্ট , ২০২৫
পরিবারে কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে—আমারও কি ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা আছে? এই প্রশ্ন বাস্তবসম্মত ও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন অনেক রোগে পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি কিছু ক্যানসারও পরিবারের একাধিক সদস্যের মধ্যে দেখা দিতে পারে। তবে প্রথমে বোঝা দরকার—বংশগত ক্যানসার বলতে কী বোঝায় এবং সব ক্যানসার কি উত্তরাধিকার সূত্রে আসে?
গবেষণায় জানা গেছে, মোট ক্যানসারের মাত্র ৫–১০ শতাংশ সরাসরি বংশগত বা জেনেটিক কারণে হয়। কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার—যেমন স্তন, ডিম্বাশয়, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যানসার—একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়, যা জিনগত পরিবর্তনের ফল হতে পারে।
চিকিৎসকরা পারিবারিক ক্যানসারের ঝুঁকি বিশ্লেষণে আত্মীয়দের সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করেন—
নিকট আত্মীয় : মা, বাবা, আপন ভাই-বোন ও সন্তান। এদের রোগ ইতিহাস ঝুঁকি নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জেনেটিক মিল সবচেয়ে বেশি।
মধ্যম আত্মীয় : দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-মামা, ফুফু-খালা। বিশেষ করে অল্প বয়সে একাধিক সদস্যের একই ক্যানসার হলে এদের তথ্য জরুরি।
দূর সম্পর্কের আত্মীয় : চাচাতো/মামাতো ভাই-বোন এবং দাদা বা নানার ভাই-বোন। জেনেটিক ঝুঁকি সন্দেহ হলে এদের তথ্যও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
যদি বংশে ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, করণীয়
পরিবারের রোগতথ্য সংরক্ষণ করুন : কে কোন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন, আক্রান্ত বয়স কত ছিল—সব লিখে রাখুন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন : প্রয়োজনে মেডিকেল অনকোলজিস্ট বা জেনেটিক কাউন্সেলরের সাথে যোগাযোগ করুন।
জেনেটিক পরীক্ষা করুন : চিকিৎসক প্রযোজ্য মনে করলে নির্দিষ্ট জিন পরীক্ষার মাধ্যমে ঝুঁকি নির্ধারণ করা যায়।
নিয়মিত স্ক্রিনিং করুন : যেমন, স্তন ক্যানসারের জন্য মেমোগ্রাম, কোলন ক্যানসারের জন্য কোলোনোস্কোপি, জরায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য প্যাপ স্মিয়ার।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন : ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ঝুঁকি বাড়ায়; তাই সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখুন।
বংশে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে। সময়মতো পদক্ষেপ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব, এমনকি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে অনেক ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ নিরাময়ও সম্ভব।