প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: সোমবার , ৫ মে , ২০২৫
চুলকানি হয়নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। চুলকানি এমন একটি অনুভূতি, যা হলে শরীরে আঁচড় দিতে ইচ্ছা করে। হিস্টামিন ও অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটার (স্নায়ুকোষে সংকেত বহনকারী রাসায়নিক পদার্থ) চুলকানির জন্য দায়ী। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এর প্রকোপ বাড়ে।
চুলকানি চার ধরনের হয়। তা হলো :
১. প্রুরাইটোসেপটিভ ইচ : এটি চর্মরোগের জন্য হয়।
২. নিউরোজেনিক ইচ : এর উৎপত্তি মস্তিষ্কে, নানা রোগের জন্য হয়।
৩. নিউরোপ্যাথিক ইচ : স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার জন্য হয়। কারণ, স্নায়ু আমাদের সব অনুভূতির জন্য দায়ী।
৪. সাইকোজেনিক ইচ : এই চুলকানির কারণ মানসিক সমস্যা। যেমন প্যারাসাইটোফোবিয়া থাকলে মনে হয় শরীরে পোকা হাঁটছে বা পোকা দেখলেই চুলকানি শুরু হয়।
কেন হয় চুলকানি
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, চুলকানি হওয়ার শত শত কারণ আছে। আবার কোনো রোগ ছাড়াই চামড়া শুষ্ক হলেও, বিশেষ করে বয়স্কদের শীতকালে ত্বক চুলকায়।
এছাড়াও কৃমি সংক্রমণ, প্রসাধনী ব্যবহারে অ্যালার্জি, উলের কাপড় ব্যবহার, আবহাওয়া বা তাপমাত্রার পরিবর্তন কিংবা মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণেও চুলকানি হতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন দুধ, ডিম, গরুর মাংস, চিংড়ি, মাশরুম, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি এবং বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চুলকানি হতে পারে।
চর্মরোগের মধ্যে স্ক্যাবিস, ছত্রাক সংক্রমণ, একজিমা, অ্যালার্জি মূলত চুলকানির জন্য দায়ী। বিভিন্ন অঙ্গের রোগের জন্য যেমন লিভারের রোগ (জন্ডিস, হেপাটাইটিস, ক্রনিক লিভার ডিজিজ), কিডনির রোগ (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, ইউরেমিয়া), ক্যানসার (লিমফোমা) ও অন্যান্য রোগের বহিঃপ্রকাশ চুলকানির মাধ্যমে হতে পারে।
ইনফেকশন, ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদিও চুলকানির জন্য দায়ী।
আমাদের দেশে বেশি চুলকানি হয় স্ক্যাবিস, একজিমা, অ্যালার্জি, আর্টিকেরিয়া ও দাউদের মতো রোগের জন্য। চুলকানি না সারলে ও তীব্র হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চুলকানি হলে যা করবেন
যাদের চুলকানি আছে, তারা সাধারণ কিছু নিয়ম মানলে উপকার পাবেন। যেমন বেশি রোদে না যাওয়া, ঘাম হলে দ্রুত মুছে ফেলা, যেসব খাদ্যে, ওষুধে, কাপড়ে, প্রসাধনীতে অ্যালার্জি হয়, সেগুলো থেকে দূরে থাকা। মাঝেমধ্যে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়া। শুষ্ক ত্বকে নিয়মিত ইমোলিয়েন্ট ক্রিম, ভালো ময়েশ্চারাইজার, অলিভ অয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করা।
চুলকানি কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। তবে উচিত হলো চুলকানির কারণ নির্ণয় করে নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা করা।