প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শুক্রবার , ১ আগস্ট , ২০২৫
‘আবারও থামতে হবে?’—গাড়ি ভ্রমণে মেয়েদের প্রতি এই অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। বহু হাস্যরসাত্মক অনুষ্ঠানে নারীদের ‘ছোট মূত্রথলি’ নিয়েও ঠাট্টা হয়। কিন্তু বিষয়টি আসলে এত সরল নয়।
গবেষণা বলছে, নারীদের মূত্রথলি আকারে পুরুষদের মতোই—৪০০ থেকে ৬০০ মিলিলিটার পর্যন্ত প্রস্রাব ধারণ করতে সক্ষম। তাহলে নারীদের ঘনঘন প্রস্রাবের তাগিদ আসে কেন?
এ প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে নারী শরীরের অভ্যন্তরীণ গঠনে। নারীদের মূত্রথলি সংকীর্ণ পেলভিক অঞ্চলে জরায়ু ও যোনির সঙ্গে জায়গা ভাগ করে নেয়। ফলে তুলনামূলক কম প্রস্রাব জমলেই চাপ অনুভূত হয়। গর্ভাবস্থায় বড় হওয়া জরায়ু মূত্রথলিকে চেপে ধরায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
পেলভিক ফ্লোর পেশি, যা মূত্রথলি ও অন্যান্য অঙ্গকে সহায়তা করে, বয়স, সন্তান জন্মদান বা হরমোন পরিবর্তনের ফলে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এতে ব্লাডার নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়। একই সঙ্গে নারীদের ছোট ইউরেথ্রার কারণে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের (UTI) ঝুঁকিও বেশি, যা মূত্রথলিকে অতিসংবেদনশীল করে তোলে।
শারীরিক কারণের পাশাপাশি সামাজিক আচরণও এই প্রবণতাকে প্রভাবিত করে। ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের শেখানো হয় ‘আগেই টয়লেটে যাওয়া ভালো’, কিংবা পাবলিক টয়লেট এড়িয়ে চলা। ফলে মূত্রথলি পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রস্রাব করার অভ্যাস গড়ে ওঠে, যার ফলে ব্লাডার সম্পূর্ণ প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পায় না।
তবে সমাধানও আছে। এনএইচএসসহ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ‘ব্লাডার ট্রেনিং’ বা মূত্রথলি প্রশিক্ষণের পরামর্শ দেন। এতে ধীরে ধীরে প্রস্রাবের ফাঁক বাড়ানো হয়, এবং পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ যুক্ত করলে আরও ভালো ফল মেলে।
সবশেষে, কেউ যদি নারীদের ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার প্রবণতা নিয়ে কটাক্ষ করেন, তাকে বোঝানো দরকার—এটি কোনো দুর্বলতা নয়, বরং শরীরের গঠন ও সামাজিক অভ্যাসের যৌগিক ফল। খবর বিবিসি