প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: মঙ্গলবার , ১১ মার্চ , ২০২৫
“পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামাকাপড়, মানানসই ও সুন্দর জুতা ব্যক্তির মন ভালো করে দেয়, কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়-” প্রচলিত এই ধারণাকে পরখ করে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক সময় যখন মন খারাপ থাকে বা কিছু করার ইচ্ছা চলে যায়, তখন পোশাকই হতে পারে একমাত্র উপায় যা মনের অবস্থা বদলাতে সাহায্য করে।
পছন্দের পোশাক পরলে মনে নতুন এক উদ্যম আসে। আচরণ ও মনোভাবকে পরিবর্তন করার একটি মাধ্যম হতে পারে পোশাক। শুধু ব্যক্তিগত জীবন নয় বরং সামাজিক, পেশাগত এবং শারীরিক দিক থেকেও আত্মবিশ্বাস ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে পরিধানের কাপড়।
মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ড. বারবারা গ্রিনবার্গ বলেন, “বাবার কাছ থেকে খুব উপকারী একটি পরামর্শ পেয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন- ‘যখন একা, দুঃখিত বা উদ্বিগ্ন অনুভব করবে শুধু তোমার স্নিকার্সটা পায়ে পরে নেবে, পরবর্তী পদক্ষেপ সম্বন্ধে কোনো চাপ না নিয়েই।”
“একবার পায়ে জুতা পরার পরেই জিমে যেতে, বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে বা অন্য কোনো কাজে আগ্রহ তৈরি হবে। জুতা পরা আমাকে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বাধা পার করা, কাজ করতে উৎসাহিত এবং ভালো অনুভব করতে সহায়তা করেছে। এমন কি ছোট এই পদক্ষেপ অনেক সময় দুশ্চিন্তা বা অবসাদ থেকেও বের করে আনতে পারে”- বলেন এই মনোচিকিৎসক।
তিনি আরও বলেন, “পোশাক আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর সেই আত্মবিশ্বাসের কারণে আমাদের মধ্যে আরও বেশি প্রেরণা তৈরি হয়। এটি কিন্তু একটি গবেষণারও বিষয়।”
ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক ‘ম্যারেজ এবং ফ্যামিলি থেরাপিস্ট’ মেরিসা নেলসন পোশাক এবং অনুভূতির সম্পর্ক-কে আরও গভীরে নিয়ে এটিকে ‘এনক্লোথড কগনিশন’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
“এনক্লোথড কগনিশন’ মানে যে পোশাক পরছেন, সেটা মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করছে”- বলেন তিনি।
যেমন- স্নিকার্স’য়ের মতো এই ধরনের আরামদায়ক জুতা পরলে মস্তিস্ক শিথিল হওয়ার সংকেত দেয়, একটি ফিটিং স্যুট বা পেশাদার পোশাক পরলে মনোযোগের স্তর বৃদ্ধি পায় এবং কাজ করার ইচ্ছা তৈরি হয়।”
এই তত্ত্বটি কিন্তু চারপাশের অনেক প্রতিষ্ঠানেই ব্যবহার করা হয়। যেমন- স্কুলে ‘ইউনিফর্ম’ পরতে বলা হয় শিক্ষার্থীদের মনোযোগ এবং প্রস্তুতির জন্য। এটি মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলে এবং কাজে আরও মনোযোগী করে তোলে। তবে এ ধরনের আচরণগত প্রভাবটি শুধুমাত্র ‘ইউনিফর্ম’য়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।”
কোনো বদ্ধ অবস্থার মধ্যে আটকে থাকলে পোশাক সেখান থেকে বের হতে সাহায্য করে। সেটি হয়ত স্নিকার্স নাও হতে পারে, অন্য পছন্দের পোশাকও হতে পারে যা ভালো অনুভব করায়।
সামান্য দুশ্চিন্তা বা উদাসীনতা অনুভব করলে, স্নিকার্স পরার মতো ছোট আচরণগত পরিবর্তন সেই অবস্থা থেকে বাইরে নিয়ে আসতে সাহায্য করে।
যদি মনে হয় এক জায়গায় আটকে আছেন, তবে কাজ শুরু করার জন্য ছোট পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যেমন- স্নিকার্স পরা, যাতে একটুখানি অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় এবং মনোভাবে পরিবর্তন দেখা যায়। এই ধরনের ছোট ছোট পরিবর্তন বড় কাজে যেমন- ব্যায়াম বা সামাজিকীকরণে সহায়তা করবে।
মনে রাখতে হবে, পোশাক ছাড়াও সামাজিক সমর্থন যেমন- একে অপরের সঙ্গে থাকা, ভালো বন্ধুদের সঙ্গ পাওয়া অনেক বেশি ভালো অনুভব করতে সাহায্য করবে। মনোভাবকে ইতিবাচক করে তুলতে সাহায্য করবে।