Logo
ঢাকা শনিবার , ১৩ ডিসেম্বর , ২০২৫
Logo

ইবি ছাত্র নেতাদের ঈদ ভাবনা

মানিক হোসেন, ইবি প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: শনিবার , ২৯ মার্চ , ২০২৫

শেয়ার করুনঃ
ইবি ছাত্র নেতাদের ঈদ ভাবনা



বিদায়ের পথে পবিত্র মাহে রমজান। দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ইদ-উল-ফিতর। সকলেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইদের আনন্দটাকে কিভাবে বাড়িয়ে তোলা যায়। ব্যতিক্রম নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারাও। ইদের এই সময়ে যখন সকল মানুষ ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে উৎসবমুখর, ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতাদের ভাবনায় উঠে আসছে রাজনৈতিক সংস্কার এবং সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন।


সেই সাথে তারা সকল দল মতের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। 


ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, এক মাস সিয়াম সাধনার পর আমাদের সামনে আসছে আনন্দের উৎসব ইদুল ফিতর। এই দিন শুধু আনন্দ বা উৎসবের নয় বরং এই দিন আমাদের আত্মশুদ্ধি, ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার শপথ গ্রহণের দিন। ছাত্রশিবির সবসময়ই একটি আদর্শ সমাজ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে অগ্রসর হয়েছে।


নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের স্মৃতিচারণ করে ইবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহেদ আহমেদ বলেন, ছোটবেলা থেকেই ঈদুল ফিতর আমার কাছে খুবই অর্থবহ। শৈশবে বড়দের থেকে সালামি নেওয়া ছিল স্মরণীয় ঘটনা। আমাদের ছোটবেলার ইদ উৎসব নানান আড়ম্বরতার সাথে পালিত হতো। বিশেষ করে ঈদের চাঁদ দেখার অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এখনকার ঈদগুলোতে আনন্দের ধরণও পরিবর্তন হয়েছে। ছোট বেলায় এক ধরণের ঈদ আনন্দ ছিল বর্তমানের আনন্দ ভিন্ন।


তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার ফলে এক প্রকার ব্যস্ত সময়ই পার করতে হয়। ক্যাম্পাসের সকলের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়, নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেওয়া, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিয়ে সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়ানোর সামান্য চেষ্টা। পরিবার পরিজনের পাশাপাশি এলাকার মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে সময় কাটে। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ এবং ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয়।  বন্ধুদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও আড্ডার মাধ্যমে সুন্দর একটি মুহূর্ত পাওয়া যায়। এভাবেই ইদের আনন্দ বয়ে চলে। 


জুলাইয়ের চেতনায় সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যাশা নিয়ে ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বিপ্লব পরবর্তীতে আমরা প্রথম মুক্ত স্বাধীনভাবে ঈদ পালন করতেছি। বিগত ১৬ বছরে মুক্তভাবে ঈদ পালন করা হয়ে ওঠেনি। শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী মতাবলম্বীদের উপর দমন পীড়ন চালিয়ে দেশকে একটা কারাগারে রুপান্তরিত করেছিলো। সকলের জন্য দেশকে সংকুচিত করে রেখেছিলো। সেই জায়গা থেকে অভ্যুত্থান পরবর্তীতে এবারই প্রথম সবাই মুক্ত ও সুন্দরভাবে তাদের ঈদ পালন করতে পারবে। তবে এই ঈদ আমরা আরেকটি চেতনা নিয়ে করতে পারি যে, যেভাবে আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের জন্য সকল বিভক্তি ভুলে গিয়ে এক হয়ে লড়াই করেছিলাম সেই চেতনার জায়গা থেকে আবার আমরা সবাই এক হয়ে একটি সুন্দর দেশ গঠনে কাজ করবো।

ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ঈদ মানেই তো আনন্দ, খুশি আর উৎসবের এক অপূর্ব মিলনমেলা। কিন্তু এই আনন্দের ছোঁয়া কি সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছায়? দরিদ্র, অসহায় আর খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জীবনে ঈদের আনন্দ যেন বড়ই মলিন। তাদের অনেকেরই ঈদের দিনেও কাজের চাপে দম ফেলার ফুরসত মেলে না। সামান্য আয়ে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতেই তাদের দিন কাটে। পথশিশু বা অভাবী পরিবারের সদস্যদের নতুন জামা কেনার স্বপ্নটা যেন অধরাই থেকে যায়। তাই ঈদের এই আনন্দ যেন সমাজের প্রতিটি স্তরে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, সেদিকে আমাদের সবার নজর দেওয়া উচিত।

জমিয়তে তলাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক এস এম শামীম বলেন, ঈদ মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অপার খুশির বার্তা বয়ে আনে, যখন আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিই। ঈদের প্রকৃত আনন্দ পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গেই পাওয়া যায়। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে এটি আমাদের প্রথম ঈদ। আমরা বাকস্বাধীনতার পরিবেশ ফিরে পেয়েছি। যেখানে ঈদগাহ ময়দানে এখন ইমাম খতিবরা ভয় ভীতি প্রদর্শন ছাড়াই মন খুলে কুরআন হাদিস থেকে হকের কথা বলতে পারবেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটাই সবচেয়ে আনন্দের। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমরা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকবে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ঈদ বাঙালী মুসলমানের ঘরে ঈদের বার্তা পৌঁছে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বয়ান নিয়ে। বাঙালী মুসলিম সমাজে ঈদুল ফিতরের উৎসবে কোনো কৃত্রিমতা নেই, আছে অকৃত্রিম ভালোবাসা তৈরিতে একে অপরের কাছে আসার বাণী। একে-অপরের সাথে মোলাকাত, একে- অন্যের বাসায় সেমাই গ্রহণ এবং এক সাথে ঈদের সালাত আদায়ের মাধ্যমে মুসলিম সমাজে ভ্রাতৃপ্রেমে এক নব সংগীত পরিবেশন করেন ঈদুল ফিতর।

তিনি আরো বলেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ফ্যাসিস্ট রেজিম মুক্ত বাংলাদেশে ইদ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্লোগান দিবে এবং শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজকে এক পতাকার নিচে সমবেত করবে বলে আমি আশাবাদী। 


Campus Mirror
শেয়ার করুনঃ

এই বিভাগের আরোও খবর

  • বাড়ি ফেরাতেই ঈদের আমেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে
    বাড়ি ফেরাতেই ঈদের আমেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে
  • অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছে জবি ছাত্রদল
    অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছে জবি ছাত্রদল
  • রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, একজন পেশাদার কূটনীতিক
    রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, একজন পেশাদার কূটনীতিক
Logo